উপসম্পাদকীয়

ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা কতদূর

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছে। প্রায় ৭ মাস ধরে চলা গাজার প্রতিরোধ যুদ্ধের পর এমন এক আবহ এখন তৈরি হয়েছে যাতে ইসরাইল গাজার ফিলিস্তিনিদের অবস্থানের সর্বশেষ এলাকা রাফায় সামরিক অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। অন্যদিকে এর বিরুদ্ধে দৃশ্যত কথা বলছে গোটা বিশ্ব সম্প্রদায়। ইসরাইলের সবচেয়ে বড় মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের এই অভিযান অনুমোদন না করার কথাই বলছে। চাপ বাড়ছে বড় মুসলিম দেশগুলোর।

বরফ গলবে?
এর মধ্যেই সমঝোতার টেবিলে দু’পক্ষের কিছুটা নমনীয়তার আভাস মিলছে। ইসরাইল বন্দিবিনিময় চুক্তির বিপরীতে হামাসের মূল দাবি গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার, বাস্তুচ্যুতদের নিজ এলাকায় ফিরে যাওয়ার সুযোগ দেয়া এবং দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ বন্ধের বিষয় বিবেচনা করা হতে পারে বলে জানাচ্ছে। অন্যদিকে হামাসের উপপ্রধান খলিল আল-হাইয়া বলেছেন, ১৯৬৭-এর পূর্ববর্তী সীমান্তে একটি ‘সম্পূর্ণ সার্বভৌম’ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিনিময়ে দলটি তার সামরিক শাখা ভেঙে দিতে প্রস্তুত। তিনি আরো বলেছেন, হামাস প্রতিদ্বন্দ্বী ফাতাহ উপদলের নেতৃত্বে ‘প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের’ সাথে একীভূত হতে চায় এবং গাজা ও পশ্চিমতীরের জন্য একটি ঐক্যবদ্ধ সরকার গঠন করতে চায়।

গাজায় চরম সঙ্ঘাতের আশঙ্কার পাশাপাশি সর্বশেষ এই উন্নয়ন মধ্যপ্রাচ্যে মৌলিক কিছু পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে। এ সময় ইসরাইলের যুদ্ধ মন্ত্রিসভার তিন প্রধান কর্ণধার নেতানিয়াহু, গ্যালান্ট ও সেনাপ্রধানের ওপর যুদ্ধাপরাধের দায়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির প্রস্তুতির খবর বেরিয়েছে ইসরাইলের গণমাধ্যমে। শীর্ষ মুসলিম দেশগুলো একমত যে ইসরাইল রাষ্ট্র হিসেবে নিরাপত্তা পেতে চাইলে স্বাধীন ফিলিস্তিনকে মেনে নিতে হবে।
বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্রে চাপ

৭ অক্টোবরের পর ইসরাইল গাজায় সর্বাত্মক সামরিক অভিযান চালানোর সময় যুক্তরাষ্ট্র্রসহ পশ্চিমের প্রায় সব দেশের পূর্ণ সমর্থন লাভ করে। ৭ মাস পর ইসরাইলের নির্বিচার গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের বিরুদ্ধে পুরো বিশ্ব জনমত বৈরী হয়ে উঠছে। নিরাপত্তা পরিষদের যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তাব পাস হয় যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো ছাড়াই। এই প্রস্তাবে যুক্তরাজ্য ও সুইজারল্যান্ড ভোটদানে বিরত থেকেছে, এর বাইরে বাকি সবাই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। দুই রাষ্ট্র সমাধান তথা স্বাধীন ফিলিস্তিনের স্বীকৃতি দানকে ইউরোপের অনেক গুরুত্বপূর্ণ দেশ সমর্থন জানিয়েছে। জাতিসঙ্ঘের সদস্য করার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দিলেও তার বক্তব্য ছিল ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার বিষয়টি জাতিসঙ্ঘের ভোটাভুটি দিয়ে হবে না। এ জন্য দুই দেশকে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় যেতে হবে।

এরই মধ্যে নিউ ইয়র্ক টাইমসের খ্যাতনামা কলামিস্ট থমাস ফ্রিডম্যান রাফা অভিযান বন্ধের জন্য প্রতিশ্রুত সামরিক সাহায্য স্থগিত রাখার কৌশল ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন বাইডেনকে। ফ্রিডম্যান বলেছেন, ইসরাইলিদের রাফায় গ্রাউন্ড অপারেশন অথবা সৌদি আরবের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের একটি পথ বেছে নিতে হবে। বাইডেনের ঘনিষ্ঠ সাংবাদিক ফ্রিডম্যান আরো লিখেছেন যে, দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের কোনো আশা ছাড়াই রাফায় অভিযান পরিস্থিতিকে শুধু জটিলই করবে।

Advertisement: 1:54

Close PlayerUnibots.com
ফ্রিডম্যান উল্লেখ করেন, নেতানিয়াহুকে সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে যে, সৌদি আরবের সাথে স্বাভাবিক সম্পর্ক, গাজায় একটি আরব-শান্তি রক্ষা বাহিনী এবং ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের অগ্রগতির চেয়ে রাফাহ অভিযানটি তার দেশের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ কিনা। এই মাসের শুরুর দিকে তেহরান ইসরাইলে ৩০০টিরও বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন নিক্ষেপ করার ঘটনার পর ইসরাইলকে অনেক কিছু নতুন করে ভাবতে হবে।
ফ্রিডম্যান বলেছেন যে, তিনি বুঝতে পেরেছেন সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান বিশ্বাস করেন যে ইসরাইলকে যত দ্রুত সম্ভব গাজা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অব্যাহত স্থল অভিযানের অর্থ হবে সৌদিদের স্বাভাবিকীকরণের বিরুদ্ধে নিয়ে যাওয়া এবং একই সাথে ইরানের ক্ষমতায়ন।

ইসরাইলে গৃহদাহ

গাজা যুদ্ধে কী করা উচিত তা নিয়ে তীব্র গৃহদাহ চলছে ইসরাইলে। যুদ্ধ মন্ত্রিপরিষদের সদস্য গ্যান্টজ বলেছেন, উগ্র ডানপন্থী নেতারা হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে যদি জিম্মি উদ্ধারের চুক্তিতে বাধা দেয় তাহলে সরকারের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। গ্যান্টজের ঘোষণাটি এসেছে অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচের সতর্কবাণীর পর। অর্থমন্ত্রী বলেন, ইসরাইল রাফা আক্রমণ না করলে সরকারের ‘অস্তিত্ব বজায় রাখার কোনো অধিকার থাকবে না’। সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে, স্মোট্রিচ নেতানিয়াহুকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘যদি আপনি একটি সাদা পতাকা উড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন এবং হামাসকে ধ্বংস করার মিশন সম্পূর্ণ করতে এবং দক্ষিণ ইসরাইলের বাসিন্দাসহ দেশের সব নাগরিকের জন্য শান্তি পুনরুদ্ধার করতে আর অপহৃত ভাইবোনদের ফিরিয়ে আনতে অবিলম্বে রাফা জয়ের আদেশ বাতিল করেন তাহলে আপনি যে সরকারের প্রধান হবেন তার অস্তিত্বের কোনো অধিকার থাকবে না।’ তার এই বক্তব্যের প্রতিধ্বনি করেন সহকর্মী কট্টর-ডান মন্ত্রী ইতামার বেন গভিরও। গভির টুইট করেছিলেন যে, ‘বেপরোয়া চুক্তি সরকার ভেঙে দেয়ার শামিল।’

স্মোট্রিচ এবং বেন গভিরের আলটিমেটামের নিন্দা করেন বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার ল্যাপিড। তিনি এই দুই মন্ত্রী নেতানিয়াহুর জোট থেকে তাদের দলকে বের করে নিয়ে গেলে এবং এর বিরোধিতা করলে সরকারকে বন্দিবিনিময় চুক্তি অনুমোদনের জন্য প্রয়োজনীয় ভোট দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

ল্যাপিড এক্স প্রোফাইলে লিখেছেন, ‘সরকারকে বেছে নিতে হবে: জিম্মিদের জীবিত ফিরে পাবে নাকি বেন গভির ও স্মোট্রিচকে সাথে রাখবে। আমেরিকানদের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করবে নাকি বেন ও স্মোট্রিচকে পাশে রাখবে। সৌদিদের সাথে স্বাভাবিকীকরণ চুক্তি করবে, ইসরাইলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পথে থাকবে নাকি বেন গভির ও স্মোট্রিচকে খুশি করবে।
তেলআবিব নমনীয় হচ্ছে!

হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফায় সামরিক আগ্রাসন চালানোর আগে ইসরাইল মার্কিন উদ্বেগ ও চিন্তাভাবনা শুনতে রাজি হয়েছে। ওয়াশিংটন বলেছে যে, তারা একটি উপযুক্ত এবং বিশ্বাসযোগ্য মানবিক পরিকল্পনা ছাড়া রাফা অপারেশন সমর্থন করতে পারে না।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন এই সপ্তাহে এই অঞ্চলে সফর করবেন এবং কিরবি বলেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ অব্যাহত রাখবে যা ওয়াশিংটন কমপক্ষে ছয় সপ্তাহ স্থায়ী করতে চায়।

হামাসের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা এএফপিকে বলেছেন, তারা সোমবার গাজা যুদ্ধবিরতির জন্য ইসরাইলের সর্বশেষ পাল্টা প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়া জানাবে।

একজন ইসরাইলি কর্মকর্তা শুক্রবার চ্যানেল ১২ নিউজকে বলেছেন যে, ইসরাইল আরো বড় ছাড় দিতে ইচ্ছুক, যার মধ্যে থাকতে পারে উত্তর গাজায় বাসিন্দাদের ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেয়া। চ্যানেলটি আরো জানিয়েছে, ইসরাইল গাজাকে দুই ভাগে বিভক্তকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ করিডোর থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করতে ইচ্ছুক।

একই টিভি স্টেশন বিশদ বিবরণ ছাড়াই রিপোর্ট করেছে যে, গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরাইলের যুদ্ধের সাথে যুদ্ধবিরতি প্রতিটি অতিরিক্ত জিম্মি মুক্তির জন্য আরো এক দিন স্থায়ী হবে। এই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে যে শর্তাবলিতে জানানো হচ্ছে, পরবর্তী পর্যায়ে যুদ্ধের সমাপ্তি এবং আরো সব জিম্মিদের মুক্তি নিয়ে আলোচনা করা হবে।

টিভি রিপোর্টের প্রতিক্রিয়ায়, একজন সিনিয়র ইসরাইলি কর্মকর্তা শনিবার টাইমস অব ইসরাইলকে বলেছেন যে, ‘ইসরাইল যুদ্ধের সমাপ্তি, স্ট্রিপ থেকে সেনা প্রত্যাহার বা হামাসের উপস্থাপন করা অন্যান্য দাবিতে এখনো সম্মত হয়নি। তবে মার্কিন সংবাদ ওয়েবসাইট অ্যাক্সিওস, দুই ইসরাইলি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে যে ইসরাইলের সর্বশেষ প্রস্তাবে জিম্মিদের মুক্তির পর গাজায় ‘টেকসই শান্তি পুনরুদ্ধার’ নিয়ে আলোচনা করার ইচ্ছা রয়েছে। প্রায় সাত মাসের যুদ্ধে এই প্রথমবার ইসরাইলি নেতারা যুদ্ধের সমাপ্তি নিয়ে আলোচনা করার কথা বললেন।

এই সময়ে, দুর্নীতির অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বিচারের কাজ চলছে এবং তিনি যুদ্ধ চালানোর জন্য ক্রমবর্ধমান প্রতিবাদের মুখোমুখি হয়েছেন। ইসরাইলের আকাশ ও স্থল যুদ্ধ গাজা স্ট্রিপের বেশির ভাগ অংশ ধ্বংস করেছে এবং এর ২৩ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে। এতকিছুর পরও হামাস পরাজিত হয়নি এবং দখলদার রাষ্ট্রের দক্ষিণ ও উত্তরে হাজার হাজার ইসরাইলি এখনো বাড়িঘর থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে আছে। তাছাড়া গাজায় প্রায় ১৩০ জন জিম্মি রয়েছে।

কিছু জিম্মির পরিবার নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ক্রমশ স্পষ্টবাদী হয়ে উঠেছে, তাকে তাদের প্রিয়জনদের ভাগ্যের আগে নিজের রাজনৈতিক অস্তিত্ব রক্ষাকে অগ্রাধিকার দেয়ার দায়ে অভিযুক্ত করেছে। নেতানিয়াহু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, জিম্মি মুক্তির জন্য তিনি যথাসাধ্য করছেন।

ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিপর্যয়
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই একমাত্র দেশ যে রাফায় ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধ করতে সক্ষম। এটি হলে তা হবে ফিলিস্তিনি জনগণের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিপর্যয়।

রিয়াদে দু’দিনব্যাপী ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বিশেষ বৈঠক শুরু হওয়ার সময় যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্দেশ করে আব্বাস বলেন, রাফা অভিযান বন্ধ করতে ইসরাইলকে বলুন কারণ আমেরিকাই একমাত্র দেশ যা ইসরাইলকে এই অপরাধ থেকে বিরত রাখতে পারে। আব্বাস আরো বলেন যে, ইসরাইলের ‘পূর্ণ নিরাপত্তার অধিকার’ রয়েছে এবং ফিলিস্তিনিদের ‘আত্মনিয়ন্ত্রণ ও একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের অধিকার’ রয়েছে।
রিয়াদে শীর্ষ সম্মেলনের শুরুতে সৌদি আরব আঞ্চলিক ‘স্থিতিশীলতার’ আহ্বান জানিয়ে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ইসরাইল-হামাস যুদ্ধের প্রভাব সম্পর্কে সতর্ক করে।

রাফায় জিততে পারবে ইসরাইল?
২০০ দিন ধরে, নেতানিয়াহু যুদ্ধ করছে, গণহত্যা চালিয়েছে এবং হাজার হাজার শিশুকে হত্যা করেছে। বাড়িঘর, স্কুল, মসজিদ এবং সব ধরনের অবকাঠামো ধ্বংস করেছে, কিন্তু বন্দীদের মুক্ত করতে পারেনি। প্রশ্ন হলো, এখন রাফাহ আক্রমণ করে কি সফল হতে পারবে নেতানিয়াহু। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আভিগডর লিবারম্যান, নেতানিয়াহুর রাফা যাওয়ার পরিকল্পনাকে উপহাস করে বলেছেন: ‘তিনি ঘোষণা করেছেন যে তিনি রাফায় চলে যাচ্ছেন এবং তার প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্ট তা করার সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। হতে পারে, তারা হয়তো হামাসকে অপারেশনের সঠিক সময় এবং তারিখ দেয়ার জন্য অপেক্ষা করছে?

শীর্ষস্থানীয় হিব্রু সংবাদপত্র মারিভ সন্দেহ প্রকাশ করে বলেছে যে, ‘যারা মনে করেন যে রাফা অভিযান এই যুদ্ধের শেষ অধ্যায় হবে এবং হামাসকে পতনের দিকে নিয়ে যাবে, তারা বোঝেন না, বিজয় সম্পর্কে নেতানিয়াহুর দাবি একটি রসিকতা বা বিভ্রম ছাড়া বেশি কিছু নয়।’
মারিভ বলেছে, নেতানিয়াহুর সেনাবাহিনী গাজার সব অংশে আক্রমণ করেছে এবং সেনা প্রত্যাহারের পর হামাস দ্রুত পুনরুজ্জীবিত হয়েছে, নিজেকে পুনর্গঠিত করেছে এবং তার প্রতিরোধ পুনরায় শুরু করেছে।

ইসরাইলি লেখক, সামরিক এবং কৌশলগত বিশেষজ্ঞদের ১০ জন নেতানিয়াহুকে পরামর্শ দিয়েছেন বন্দীদের মুক্তির জন্য উচ্চমূল্য পরিশোধ করে হামাসের সাথে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে নিতে। কারণ তাদের মতে, এটিই লক্ষ্য অর্জনের একমাত্র উপায়।

তারা মনে করেন, ইসরাইলের অভ্যন্তরীণ জটিলতা যাই হোক না কেন, কারাগারে যাওয়ার ভয়ে নেতানিয়াহু বিজয় অর্জনের যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন, কিন্তু তিনি এখনো জানেন না সেটি কিভাবে সম্ভব। তার ঔদ্ধত্য তাকে অভ্যন্তরীণ বা বাইরের মিত্রদের, এমনকি তার পৃষ্ঠপোষক মার্কিন প্রেসিডেন্ট, সিনিয়র কর্মকর্তা ও কংগ্রেসম্যানদের কাছ থেকে কোনো পরামর্শ না শোনার জন্য প্ররোচিত করে। এমনকি তিনি শিনবেথ ও মোসাদ প্রধানসহ তার সামরিক উপদেষ্টাদের কথাও শোনেন না, যারা ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের সাথে আলোচনায় নেতৃত্ব দেন।
সুতরাং, নেতানিয়াহু রাফায় হামলা করলেও তিনি তার স্বপ্নের বিজয় অর্জন করতে পারবেন না।

ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের জন্য বিশ্বব্যাপী সমর্থন এখন তীব্রভাবে বাড়ছে এবং আরো বাড়বে আর নেতানিয়াহুর প্রতি ক্ষোভ ও তার অপরাধগুলোর প্রতি ঘৃণাও একই সাথে তীব্র হচ্ছে। এ অবস্থায় শান্তির একমাত্র পথ হলো ইসরাইলের নিরাপত্তার বিনিময়ে একটি পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। বিশ্বকে সে পথেই এগোতে হবে।

mrkmmb@gmail.com

Show More

Related Articles

Back to top button