আবু নাবিল:
প্রযুক্তির নানাবিধ অপব্যবহারে বিষিয়ে উঠেছে আমাদের সামাজিক ও পারিবারীক জীবন। বিশ্বের সামাজিক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে পরিচিত ’ফেসবুক এখন অনেক ক্ষেত্রে যেন গলার কাঁটা হয়ে দেখা দিয়েছে।এক শ্রেনীর মানুষের অপব্যবহার ও অতিব্যবহারে বিজ্ঞানের এ বিশ্ময়কর আবিস্কারটি এখন সুফলের চেয়ে নানা মুখি সমস্যাই বেশি করছে। অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়, নৈতিক অবক্ষয়,অপরাধ প্রবনাতা বৃদ্ধি,সামাজিক অবক্ষয়, সময়ের যথেচ্ছ অপচয়,অভিভাবক অমান্য করার প্রবনতা বৃদ্ধি,পরকিয়া, অপপ্রচার, এমনকি অপরিপক্ক বিয়ে ও আত্মহত্যার মত ঘটনাও ঘটছে এ যোগাযোগ মাধ্যমটির অপব্যবহারে। আর এর প্রধান শিকার হচ্ছে উঠতি বয়সী তরুন-তরুনী,যুবক-যুবতি, স্কুল কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া শিক্ষার্থীরা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ফেসবুক টিকটকের নেতিবাচক প্রভাবে সমাজে যেমনি নানাবিধ অপরাধের সৃষ্টি হচ্ছে,তেমনি কোমলমতি শিক্ষার্থীরা হচ্ছে বিপথগামী।এ অবস্থা মোকাবেলায় অভিভাবকদের অধিক সচেতন হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন অভিজ্ঞজনেরা। অভিজ্ঞরা মনে করেন, অতিমাত্রায় পশ্চিমা সংস্কৃতির আগ্রাসন ও লাগামহীন জীবন যাপন তরুন প্রজন্মকে উচ্ছৃংখল ও উন্নসিক করে তুলেছে। প্রগতি ও আধুনিকতার নামে ফেসবুক ও ইন্টারনেটভিত্তিক অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ক্রমাগত বিদেশি সাংস্কৃতির আগ্রাসন চালানো হচ্ছে। নীরবে প্রদর্শন করা হচ্ছে অবৈধ ভাবে যৌনতার র্চচার নানা চিত্র। বিভিন্ন বিজ্ঞাপনী সংস্থা তরুনদের পশ্চিমা জীবনযাপনে উৎসাহ দিচ্ছে। এমনিতেই আমাদের পরিবার গুলো ধর্মীয় অনুশাসনের ব্যাপারে সম্পূর্ন উদাসীন। এ অবস্থা দিন দিন আরো খারাপ পর্যায়ে যাচ্ছে। ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা সহজেই বিপথগামী হচ্ছে।এক্ষেত্রে অনেক অভিজ্ঞজনেরা মনে করেন অভিভাবকদের সচেতনতাই পারে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অপব্যবহার প্রতিরোধ করতে। তবে তা কিন্তু ছেলে মেয়েদের শিশু থেকেই অভ্যাস গড়ে তুলে এর কুফল সম্পর্কে জ্ঞান দিতে হবে। শিশু মেধায় যদি তা একবার ঢোকানো যায় তবেই নিয়ন্ত্রনে রাখা সম্ভব হতে পারে।
এ নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষের মতামত নিয়ে দেখা গেছে তারা বেশির ভাগই হতাশা প্রকাশ করেছেন।একজন অভিভবক বলেন নানান অজুহাতেই আমরা অল্প বয়সে বাচ্চাদের হাতে মোবাইল তুলে দিচ্ছি। আর এই সুযোগেই স্কুল পড়–য়া বাচ্চারা মোবাইলে ফেসবুক,টিকটকসহ নানা অপসন চালাচ্ছে। এতে করে পড়াশুনায় অমনোযোগিতা,উদ্ভট অভ্যাস রপ্ত ও রাত জেগে মোবাইল চালোনার কারনে ঘুমের ব্যাপক ঘাটতিতে মেধাশক্তি লোপ পাচ্ছে। ফলে পাঠ্যবইয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন হচ্ছেনা, ঘটছে স্বাস্থ্যহানি এবং স্মৃতিশক্তি দুর্বল হওয়ার প্রভাব। শিক্ষাসচেতন অভিজ্ঞ অভিভাবকদের মতে বয়সভিত্তিক ইন্টানেট ব্যবহার বিধিমালা তৈরী করা উচিৎ। কারন পরিস্থিতি এমন এক পর্যায়ে যাচ্ছে যে ছেলে-মেয়েরা দিন দিনই মোবাইল ফোনে আসক্ত হয়ে মেধার বিকৃতি ও অকার্যকারিতায় শেষ পযর্ন্ত উদাসীন হয়ে পড়ছে। পড়ালেখায় অনীহার কারনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ঝরে পড়ছে। এ ক্ষেত্রে তারা অভিভাবকদের পরামর্শ বা বারন বা শাষন কোনটাই মানছে না। এ অবস্থা থেকে উত্তরনে অভিভাবকদেরকে সতর্ক দৃষ্টি রেখে সন্তানদের সঠিকভাবে পরিচালনা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
মদিনা মোনাওয়ারার আকুল মাসনা আল মাইমানি মসজিদের ইমাম শেইখ মোহাম্মাদ রাবিয়া ইসলাম বলে,ইসলামের বিধান না মানার কারনে মানুষ বিপথগামী হচ্ছে। কোরআন ও হাদিস অনুস্মরন না করায় সমাজে নানা অপরাধের সুত্রপাত হচ্ছে। আমাদের সন্তানদের শিশু থেকেই ধর্মীয় মুল্যবোধ শিক্ষা দিতে হবে। কোরআন সন্নাহর আলোকে জীবন যাপন সম্পর্কে শিশুদের মেধাকে গড়ে তুলতে হবে। ধর্মীয় মুলবোধ জীবনের সর্বক্ষেত্রে বাস্তবায়িত করতে পারলে সুসন্তান হতে বাধ্য। আমি মনে করি ইসলামী অনুশাষন মেনে চললে সব বালা মুছিবত পরাভূত করা সম্ভব।