১০ জিলহজ্ব। পবিত্র ঈদুল আজহা। কোরবানির ঈদ । মুসলিম উম্মাহর দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব বা আনন্দের দিন। এই পবিত্র দিনটিকে ঘিরে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে পশু কোরবানী করবেন সামর্থবান মুসলমানেরা। সবাই ঈদের জামায়াতে শরীক হবেন। ঈদ উৎসব উদযাপন করবেন। আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে খোদাভীতি বা তার আনুগত্য প্রকাশ করবেন। পবিত্র ঈদুল আজহার সাথে নিবিড় সম্পর্ক পবিত্র হজ্বের। পবিত্র নগরী মক্কার অদুরে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হয়ে লাব্বায়েক আল্লাহুম্মা লাব্বায়েক ধ্বনির মাধ্যমে বিশ্বের প্রায় অর্ধকোটি মুসলমান হজ্ব পালন হাজীদের আনুগত্যের স্বীকৃতি প্রকাশ পাবে। বিশ্ব প্রভুর কাছে নিজেদের আনুগত্য প্রকাশের পাশাপাশি মুসলিম উম্মাহর শঅন্তি সমৃদ্ধি ঐক্য সাম্য এবং ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য প্রার্থনা করবেন। ঈদুল আজহা মুসলিম মিল¬াতের পিতা হযরত ইব্রাহিম (আঃ) ও তার পুত্র হযরত ইসমাইল (আঃ) এর স্মৃতি বিজড়িত। স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে হযরত ইব্রাহিম (আঃ) আল্ল¬াহর নির্দেশ পালন করতে গিয়ে পুত্র ইসমাইল (আঃ) কে কোরবানী করতে গিয়েছিলেন। এ ছিল হযরত ইব্রাহিম (আঃ) প্রতি পরীক্ষা। তিনি পুত্রকে কোরবানী (উৎসর্গ) করতে গিয়ে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। সাথে সাথে পুত্র ইসমাইলের পরিবর্তে পশু কোরবানী করার নির্দেশ আসে আল্লাহর পক্ষ থেকে। সেই ঐতিহাসিক ঘটনার স্মৃতি ধারন করেই পশু জবাইয়ের মাধ্যমে কোরবানীর বিধান এসেছে ইসলামী জীবন ব্যবস্থায়। সামর্থবান মুসলমানদের জন্য কোরবানী ওয়াজিব। মহান প্রভুর সন্তষ্টির উদ্দেশ্যে কোরবানী করার আনন্দ থেকেই পালিত হয় ঈদুল আজহা বা কোরবানীর ঈদ। প্রতি বছর জিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়। ইসলামে কোরবানী খুবই মর্যাদাপূর্ণ। পবিত্র কোরআনে সূরা কাউসারে বলা হয়েছে অর্থাৎ অতএব আপনার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে নামাজ পড়–ন এবং কোরবানী করুন।
সুরা হজ্বে বলা হয়েছে অর্থাৎ কোরবানি করা পশু মানুষের জন্য কল্যাণের নির্দেশনা। কোরবানীর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে খোদাভীতি। তার আনুগত্য প্রকাশ। মূলকথা খোদার নির্দেশ পালনের মধ্যে দিয়ে তার সন্তুষ্টি অর্জনই কোরবানীর মূল উদ্দেশ্য। তার পথে প্রয়োজণে নিজের জীবন ও সবচেয়ে প্রিয় বস্তু উৎসর্গের জন্য প্রস্তুত হওয়ার শিক্ষা এর মধ্যে নিহিত। এ জন্যই পশু কোরবানীর সময় বলা হয় কুল ইন্না সালাতি, ওয়া নুছুকি, ওয়া মাহ্ইয়াইয়া ওয়া মামাতি লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। অর্থাৎ বলুন নিশ্চয় আমার নামাজ, আমার কোরবানী, আমার জীবন, আমার মৃত্যু সবই বিশ^ জাহানের রব আল্লাহর জন্য (উৎসর্গিত)।