
স্টাফ রিপোর্টার :
যশোর বিল-বাওড় মৎস উন্নয়ন প্রকল্পাধীন ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর বলুহর বাওড়টি হরিলুটের কারখানায় পরিনত হয়েছে। এই বাওড়ের মালিক এখন সরকারী কর্তৃপক্ষ নাকি মৎসজীবিরা (মালোরা) এ নিয়ে চলছে জোর সমালোচনা। অভিযোগ শোনা যাচ্ছে, এ বাওড়ের ম্যানেজার সিদ্দিকুজ্জামান বার বার সরকারি (উৎপাদন) টার্গেট ফেল এবং দূনীর্তি ও আত্মসাতের কারনে এ বছর গোপনে মৎসজীবিদের কাছে বাওড়টি কনট্রাক দিয়ে লুকোচুরি খেলছেন। যার ফলে সরকারি এ বাওড়ে স্থানীয় এলাকার মৎসজীবিরা মাছ ধরা,বিক্রিসহ সব কর্তৃত্ব নিজেদের হাতে নিয়েছে। সরকারি কর্তৃপক্ষের কোন নির্দেশনা ছাড়াই ম্যানেজার সিদ্দিকুজ্জামান বাওড়ের সার্বিক ব্যবস্থাপনা মালোদের হাতে তুলে দিয়েছে। মাছ ধরা ,বিক্রি করা সব কিছু মৎসজীবি বা মালোরা করছে নিজেদের মতো করে। সরকারি নিয়ম কানুন মানছে না। মাছ ধরার পর অগ্রাধিকার থাকলেও এলাকার জনগন মাছ পাচ্ছে না। বাওড়ে মাছ কখন ধরা হবে ও বিক্রি হবে জানতে গেলে বলা হয় ফিসিং হচ্ছে না। আবার বাওড়ে মাছ ধরার পর তা কোন ঘাটে,কখন তোলা হবে? গভীর রাতে তোলা হবে নাকি দিনে তোলা হবে তার হদিস মসৎজীবি বা মালোদেও মধ্যেই সীমাবদ্ধ বা গোপন থাকছে। অভিযোগে আরো জানা গেছে, প্রকল্পের সর্ববৃহৎ এ বাওড়টিতে এর আগে ২০০ মেঃ টন মাছ টার্গেট পূরন হয়েও লাভ হতো । কিন্তু মৎস অফিসার সিদ্দিকুজ্জামান যোগদানের পর থেকেই শুরু হয়েছে টার্গেট ফেল। বিগত ৩টি ফিসিং মৌসুমে ১৮০ মেঃটন টার্গেট ধরা হলেও তা পূরনে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। এর কারন নাকি তার দূর্নীতি,লুটপপাট ও আত্মসাৎ। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, এ বাওড় প্রকল্পটি প্রতিষ্ঠার মুল উদ্দেশ্য ছিল এলাকার মানুষের মাছের চাহিদা পূরন। সে কারনে নিয়ম করা হয় বাওড়ের মাছ ধরার পর তা বাওড়ের ল্যান্ডিং পয়েন্টে তুলে এলাকাবাসির কাছে বিক্রির পর উদ্বৃত্ত মাছ এলাকার বাজারে ও বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করা। কিন্তু প্রতিষ্ঠার পর দীর্ঘ কাল নিয়ম অনুযায়ি বাওড়টি পরিচালিত হলেও এখন সব নিয়ম-কানুন লন্ড-ভন্ড হয়ে গেছে। এরই মধ্যে বর্তমান বাওড় ম্যানেজার সিদ্দিকুজ্জামান দায়িত্ব গ্রহনের পর বার বার টার্গেট ফেল এবং বাওড়টি লোকসান গুনছে। এরই মধ্যে বাওড়ের বহু লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিশ^শÍ সূত্রে জানাগেছে, ম্যানেজার সিদ্দিকুজ্জামান বাওড় হ্যাচারীর টাকাসহ সরকারি ফান্ডের টাকা হিসেব দিতে পারছেন না। এসব টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন বলে সুত্র জানায়। এ নিয়ে বাওড় প্রকল্প ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ পড়েছেন বিপাকে। তারা এ ধুরন্ধর বাওড় ম্যানেজারকে বদলী করতেও পারছেন না আবার তিনি বহার থাকলে বাওড়ের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিয়তার অন্ধকারের দিকে যাচ্ছে। এরই মধ্যে তিনি কোন রহস্যজনক কারনে বাওড়টি মৎসজীবিদের কাছে গোপনে লিজ দিয়ে তাদেও হাতে বাওড়ের কর্তৃত্ব ছেড়ে দিয়েছেন। যার ফলে স্থানীয় এলাকার মানুষ মাছ পাচ্ছে না। মালোরা রাতের অন্ধকারে তাদের গোপন ঘাটে মাছ তুলে দুর দুরান্তের বাজারে বিক্রির জন্যে নিয়ে যাচ্ছে। এদিকে মৎসজীবিদের সুত্রে জানা গেছে, ম্যানেজারের কাছে কন্ট্রাক নিয়ে মৎসজীবি সমিতির নেতারা বাওড়টি দুই ভাগে ভাগ করে নিয়েছে। এর এক অংশে বলুহরের মৎসজীবিরা অন্যদিকে কাগমারি ও বজরাপুরের মৎসজীবিরা মাছ আহরন ও বিক্রি করছে। এলাকার সাধারন মানুষের কাছে মাছ বিক্রি করা হচ্ছে না।
এতে এলাকার মানুষের মধ্যে অনেক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আবার মৎসজীবিদের মধ্যে বাওড় গ্রহনের পর ২৫ হাজার টাকা করে সমিতিতে জমা দানের শর্ত পুরনে যারা ব্যর্থ হয়েছেন তাদের বাওড়ের মাছ আহরন বিক্রি ও আর্থিক ভাবে বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। বাওড় পাড়ের হত দরিদ্র কিছু বাসিন্দা অভিযোগ করেন,মালোরা বাওড়ের কর্তৃত্ব হাতে পাওয়ার পর বাওড়ে ¯œান করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। এর আগে সরকারি নিয়ন্ত্রনে থাকা কালে বাওড়পাড়ের রাণী মাছ ধওে যারা জীবিকা নির্বাহ করতো তাদেও দুর্দিন যাচ্ছে। এখন বাওড়ে যেন ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। সরকারি বাওড়ের কর্তৃত্ব সরকারী কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কিভাবে ম্যানেজার নিজের খেয়ালখুশিমত মালোদের হাতে ৯০ লাখ টাকা চুক্তিতে কন্ট্রাক্ট দিলেন জানতে ম্যানেজার সিদ্দিকুজ্জামানের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়। বাওড়ের পিডি (প্রকল্প পরিচালক) নারায়ন চন্দ্রের কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন,বাওড়টি মৎসজীবিদের কাছে লিজ দেয়া হয়েছে এমন অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে বাওড় ম্যানেজার অস্বীকার করেছেন। মৎসজীবিরা স্বীকার করেনি। বাওড়টি বার বার টার্গেট ফেল করার কারন বর্তমান ম্যানেজারের অযোগ্যতা এমন অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরাও বিষয়টি পর্যবেক্ষন করছি। তার পরিবর্তে অন্য অভিজ্ঞ কাউকে দেয়ার বিষয়টি ভাবা হচ্ছে তবে সিদ্দিকুজ্জামানের কাছে বাওড়ের সরকারি টাকা খরচ কওে ফেলায় তা আদায় না করা পযর্ন্ত বদলী করা যাচ্ছে না। তাহলে টাকা উদ্ধার কঠিন হবে। এরই মধ্যে বেপরোয়া বাওড় ম্যানেজার সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে ।(অসমাপ্ত)
স্টাফ রিপোর্টার :