আরাফাতের ময়দানে লাখো লাখো মুসলমানের কন্ঠে ‘লাব্বায়িক আল্লাহুমা লাব্বায়িক’ ঘোষণার মধ্য দিয়ে হজ পালিত হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসা ধর্মপ্রাণ মানুষ মুসলিম উম্মার শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেছেন। নিজের গুনাহ মাফ, আল্লাহর রহমত প্রাপ্তি এবং তার সান্নিধ্য লাভের প্রত্যাশায় অশ্রুসিক্ত নয়নে কায়মনো বাক্যে আল্লাহর দরবারে মুনাজাত করেছেন। নামাজ, দোয়া, জিকির, মুনাজাতে লাখো লাখো মানুষেল আহাজারিতে আকাশ বাতাশ ভারী হয়ে উঠে। এক স্বর্গীয় আবেশ ছড়িয়ে পড়ে পুরো ময়দানজুড়ে। এ যেন সাক্ষাৎ এক হাশরের ময়দান। সবার পরনে কাফনের কাপড় সদৃশ্য সাদা কাপড়। মুখে একই আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা। নেই ছোট বড় ধনী-গরীবের ভেদাভেদ।
এই আরাফাতের ময়দানেই ইসলামকে পরিপূর্ণতা দানের ঘোষণা এসেছিল। এই ময়দানেই আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ সা: তাঁর ঐতিহাসিক বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন। একই নিয়মে বাংলাদেশ সহ বিশ্বের প্রায় ৩০ লাখ মুসলমান মসজিদে নামিরাহ থেকে দেয়া খুতবা শুনেছেন। জোহরের সময়ে একই ইমামের পেছনে এক আজানে জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করেছেন। খুতবায়ও মুসলিম উম্মার কল্যাণ, সুখ সমৃদ্ধি কামনা করা হয়েছে। খুতবা দেন সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি শেখ আব্দুল আজিজ ইবনে আব্দুল্লাহ আল শায়েখ।
নামাজের পর তাঁবুতে ফিরে মুসল্লিরা দলগত ও ব্যক্তিগতভাবে দোয়া ও মুনাজাত করেছেন। মুসল্লিরা সূর্যাস্ত পর্যন্ত চোখের পানিতে বুক ভাসিয়ে হাত উচিয়ে, মনের অব্যক্ত সব চাওয়া বিশ্ব প্রতিপালক মহান আল্লাহর দরবারে পেশ করেন।
সৌদি আরবে ৯ জিলহজ হাজীদের ‘উকুফে আরাফা’ বা আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের দিন। টানা পাঁচ দিন ধরে হজের আরো অবস্থানের দিনকেই হজের দিন বলা হয়। সূর্যাস্তের পর ময়দান ত্যাগ করে মুজদালিফায় আসেন হাজীরা। এখানে এসেই মাগরিব ও ইশার নামাজ একত্রে আদায় করেন এবং পরবর্তী দিনগুলোতে জামারাতে নিক্ষেপের জন্য কঙ্কর সংগ্রহ করেন। আজ ফজরের নামাজের পরই মুজদালিফা থেকে মিনায় ফিরে হাজীরা যকোরবানির পশু জবাই করবেন এবং জামারাতে কঙ্কর নিক্ষেপ করবেন। তারপর কাবাঘর তাওয়াফ ও সাফা মারওয়ায় সায়ী করার জন্য মক্কায় যাবেন। রাতে আবার মিনার তাঁবুতে ফিরে আসবেন। ১১, ১২ ও ১৩ জিলহজ মিনার তাবু থেকে গিয়েই জামারাতে কঙ্কর নিক্ষেপ করবেন।