
অ্যান্টিবায়োটিক
অধ্যাপক ড. কানিজ মওলা বলছেন, প্রতিটা অ্যান্টিবায়োটিকের একেক ধরনের প্রতিক্রিয়া আছে। লুজ মোশন হতে পারে, র্যাশ উঠতে পারে, পেট ব্যথা, পাতলা পায়খানা, ঝাপসা দেখার মতো সমস্যা তৈরি হতে পারে। এই ওষুধটি কখনোই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া উচিত না।
প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসিতে অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রির নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বাংলাদেশে। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, তা মানা হয় না।
ড. কানিজ মওলা বলছেন, ‘নিয়ম মেনে না খেলে, মাঝপথে বন্ধ করে দিলে তার শরীরে ওই ওষুধের বিরুদ্ধে একটা প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে। সারা জীবনেও আর এই ওষুধে তার শরীরে কোনো কাজ হবে না। তখন দেখা যায়, চিকিৎসকরা ওষুধ দিলেও সেটা কাজ করে না।’
সেই সঙ্গে একটা অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের সঙ্গে অন্যান্য আরো রোগের সম্পর্ক আছে। ফলে এ ধরনের ওষুধ দেয়ার আগে আরো অনেক বিষয় বিবেচনার দরকার রয়েছে।
মেট্রোনিডাজল
অধ্যাপক ড. কানিজ মওলা বলছেন, বাংলাদেশের আরেকটি খুব কমন ওষুধ হলো মেট্রোনিডাজল গ্রুপের ওষুধ। পেট খারাপ হলেই এটা কিনে খেয়ে ফেলেন। এটি এক ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক।
এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় র্যাশ ওঠার পাশাপাশি রোগীর কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। তখন তিনি আরেকটা সমস্যায় পড়বেন। তার রক্তক্ষরণ, পেটে ব্যথার সমস্যা হতে পারে। বেশি শক্ত পায়খানা হলে মলদ্বার ফেটেও যেতে পারে।
আবার অনেকে অনেকে পায়খানা নরম করার জন্য ল্যাক্সেটিভ জাতীয় ওষুধ খান। কিন্তু বেশি খেয়ে ফেললে শরীরের ইলেট্রোলাইট ইমব্যালান্স হয়ে যেতে পারে।
আরো কিছু বিপজ্জনক ওষুধ
অনেক সময় অনেকে গলার সমস্যায় ফার্মেসি থেকে থাইরয়েডের বা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ কিনে খান। কিন্তু থাইরয়েডের সমস্যায় হাইপো বা হাইপার-দুই রকমের সমস্যা হতে পারে। ‘দেখা গেল, হাইপার সমস্যায় তারা হাইপোর ওষুধ দিয়ে দিলো বা হাইপোর সমস্যায় হাইপার ওষুধ। তখন রোগীর ক্ষেত্রে উল্টো রিঅ্যাকশন ঘটবে,’ বলছেন ড. মওলা।
স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খেলে শরীরের নানারকম জটিলতা দেখা দিতে পারে। মোটা হওয়ার জন্য অনেকে এসব ওষুধ খেলে সারাজীবনের জন্য ভোগান্তিতে পড়তে পারেন। আবার এটা হঠাৎ বন্ধ করে দিলে এডিসনিয়ান ক্রাইসিস তৈরি হতে পারে, যাতে রোগীর মৃত্যুও ঘটতে পারে।
অধ্যাপক ড. কানিজ মওলা বলছেন, বাংলাদেশে দেখা যায় ঘুমেরও ওষুধও প্রেসক্রিপশন ছাড়া বিক্রি করে। সেটা একেবারেই ঠিক নয়। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এড়াতে অনেকে বাড়িতে বসে আইভি ইনজেকশন নেন। এটা একেবারেই ঠিক না। কারণ স্যালাইনে মারাত্মক রিঅ্যাকশন হতে পারে।
চিকিৎসকরা যে পরামর্শ দিচ্ছেন
প্রচলিত ও সাধারণ এসব ওষুধ খাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। – ব্যথার মতো খুব জরুরি সমস্যা হলে একটি বা দুইটি জরুরি ওষুধ দোকান থেকে কিনে খেলেও, খুব দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। – অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় কোনো ওষুধ নিজে থেকে বা ফার্মেসির কর্মীদের পরামর্শে খাওয়া যাবে না। – জ্বর, পেটে ব্যথা বা শারীরিক যেকোনো সমস্যায় নিজে নিজে ওষুধ না খেয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। – যেকোনো ওষুধ খাওয়ার আগে তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও মেয়াদ দেখে নিন। – ওষুধ কেনার সময় প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে ওষুধ কিনুন। সূত্র : বিবিসি